ইবনে তাইমিয়া রাহি. এর দৃষ্টিতে হায়াতুন নবী সা.
হায়াতুন নবী আকিদা নিয়ে কেউ কেউ এখন টানাহেচড়া করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরে মরে পড়ে আছেন বলে কেউ কেউ কটূক্তিও করেন। আবার কেউ কেউ জিন্দা নবীকে বয়ানে তালাকও দেন!
আকিদার নামে যারা আমাদেও দেশে সাধারণ মানুষদেও মাঝে অস্থিরতা তৈরী করছেন, তারা আকিদার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রমোট করেন শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহি. কে। তার আকীদাকে তারা সাধারণ মানুষের মাঝে সহিহ আকিদা বলেন চালান। আজকের পর্বে আমরা হায়াতুন নবী এর শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহি. এর বক্তব্য পাঠকের সামনে পেশ করব।
ইবনে তাইমিয়া রাহি. বলেন:
فَهَذِهِ نُصُوصُهُ الصَّرِيحَةُ تُوجِبُ تَحْرِيمَ اتِّخَاذِ قُبُورِهِمْ مَسَاجِدَ مَعَ أَنَّهُمْ مَدْفُونُونَ فِيهَا وَهُمْ أَحْيَاءٌ فِي قُبُورِهِمْ وَيُسْتَحَبُّ إتْيَانُ قُبُورِهِمْ لِلسَّلَامِ عَلَيْهِمْ وَمَعَ هَذَا يَحْرُمُ إتْيَانُهَا لِلصَّلَاةِ عِنْدَهَا وَاِتِّخَاذُهَا مَسَاجِدَ.
অর্থাৎ এ সুস্পষ্ট নসগুলো আবশ্যক করে যে, কবরকে সিজদার জায়গা বানানো হারাম। যদিও নবীগণকে কবরে দাফন করা হয়েছে এবং তারা কবরে জীবিত। আমাদের জন্য মুস্তাহাব হলো তাদের কবওে আসব সালাম পেশ করার জন্য। তাদের কাছে নামাজ পড়া কিংবা কবরকে মসজিদ বানানোর জন্য আসা যাবে না। (মাজমুউল ফতোয়া: ২৭/৫০২)
এখানে আমরা স্পষ্ট দেখতে পেলাম যে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহি. হায়াতুন নবী তথা নবীগণ কবরে জীবিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এটাই হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতেরৎ আকীদা।
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহি. আরেক জায়গায় বলেন:
وَكَذَلِكَ الْأَنْبِيَاءُ وَالصَّالِحُونَ وَإِنْ كَانُوا أَحْيَاءً فِي قُبُورِهِمْ وَإِنْ قُدِّرَ أَنَّهُمْ يَدْعُونَ لِلْأَحْيَاءِ وَإِنْ وَرَدَتْ بِهِ آثَارٌ فَلَيْسَ لِأَحَدِ أَنْ يَطْلُبَ مِنْهُمْ ذَلِكَ
অর্থাৎ এমনভাবে নবীগণ এবং পূণ্যবান বান্দাগণ যদিও তারা তাদের কবরে জীবিত, যদি ধরেও নিই যে তারা জীবিতদের জন্য দোয়া করছেন, এ ব্যাপারে কিছু নসও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এরপর কারও জন্য তাদের কাছে কোন কিছু চাওয়ার সুযোগ নেই। (মাজমুউল ফতোয়া: ১/৩৩০)
মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বিন কাসিম রাহি. “আল মুসতাদরাক আলা মাজমুযিল ফতোয়া” নামে ইবনে তাইমিয়া রাহি. এর ফতোয়ার উপর ইসতেদরাক করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন:
والأنبياء أحياء في قبورهم، وقد يصلون كما رأى محمد موسى صلوات الله وسلامه عليهما وعلى سائر الأنبياء في قبره ليلة الإسراء.
অর্থাৎ নবীগণ তাদের কবরে জীবিত। তারা সেখানে নামাজ পড়ছেন। রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের রাতে মুসা আ. কে কবরে নামাজ পড়তে দেখেছিলেন। (আল মুসতাদরাক: ১/১০১)
এজন্য আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের স্বীকৃত আকীদা হলো হায়াতুন নবী তথা নবীগণ কবরে জীবিত। খোদ শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহি.ও একাধিক জায়গায় বিষয়টি স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন। সুতারাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরে মরে পড়ে আছেন জাতীয় জগণ্য আকীদা থেকে লালন করা থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।