বই: ইমাম বুখারির দেশে
লেখক: রেজাউল কারীম আবরার
প্রকাশনায়: কালান্তর প্রকাশনী
বুখারা, সমরকন্দ, তিরমিজ, নামগুলো মুসলমানদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সোভিয়েত আগ্রাসনের নাগপাশ ছিন্ন করে ১৯৯১ সালে উজবেকিস্তান স্বাধীনতা অর্জন করে। এরপর কমিউনিজমের ভূত হয়ে উজবেক মুসলমানদের ঘাড়ে সাওয়ার হয়েছিলেন কমিউনিজমে বিশ্বাসী প্রথম প্রেসিডেন্ট ইসলাম করিমভ। ২০১৬ সালে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের একনায়কতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে ইসলাম করিমভ এর মৃত্যুতে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জায়োয়েব ক্ষমতায় আসার পর উজবেকিস্তানে প্রাণ ফিরতে শুরু করে। ভ্রমনের উপর আরোপিত অনেক কড়াকড়ি শিথিল হতে শুরু করেছে। ধুলোর স্ত্তপক্ষ হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক জায়গাগুলো মানুষের কল কাকলিতে মুখর হতে শুরু করেছে।
আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করছি, তিনি হঠাত করে আমাদের সাহাবি, তাবেয়ি ও অসংখ্য ইমামদের পূণ্য স্মৃতি বিজড়িত, বুখারা, সমরকন্দে আমাদের সফর করার তাওফিক দান করেছেন।
আকিদার ক্ষেত্রে আমি আশআরি, মাতুরিদি এবং ফিকহের ক্ষেত্রে আমি হানাফি। এগুলো নিয়ে বিস্তর পক্ষড়াশুনা করার তাওফিক আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। ইতিহাসের বুখারা, সমরকন্দের পথ-ঘাট, গলি, ঘুপচির সঙ্গে আমি পরিচিত! আমি বইয়ের পাতায় পাতায় বুখারা, সমরকন্দে ঘুরে বেড়িয়েছি অসংখ্যবার!
নিজেদের ব্যবস্থাপনায় আমরা ছয় দিনের সফরে উজবেকিস্তানে যাই। ঐতিহাসিক জায়গা এবং সাহাবি, ইমামদের মাকবারা জিয়ারত করি। ‘শাহে জিন্দা’ তে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচাত ভাই ক্বুছাম বিন আববাস রাযি. এর কবর দীর্ঘক্ষণ জিয়ারত করার পক্ষর অন্তরে এক ধরণের প্রশান্তি অনুভব করি। ‘শাহে জিন্দা’র পাহাড় থেকে নেমে আসার পথে সফরনামা লেখার কথা হৃদয়ে জেগে উঠল!
ছোটবেলা থেকে আমি সফরনামার একজন মন্ত্রগুগ্ধ পাঠক। রিহলাহ ইবনে বতুতা, রিহলাহ ইবনে জুবায়ের থেকে শুরু করে বর্তমানের আবুল হাসান নদভি হয়ে তাকি উসমানির পুরো সফরনামা পড়েছি।
আমি শক্ত কোন লেখক নই। হৃদয়ের আকুতিকে কলমের কালিতে লিপিবদ্ধ করার মত শক্তি আমার কলমে নেই। ইলমের শহরের সফরনামা হওয়ার কারণে সাহস করে কিছু অনুভূতি লিখে ফেললাম! শ্রদ্ধেয় আবুল কালাম আজাদ ভাইয়ের চাপ প্রয়োগ না হলে হয়ত লেখা হত না! আল্লাহ তাকে এবং ‘কালান্তর’ কে কবুল করুন।
উজবেকিস্তান সফর করে আমি অনেক কিছু অর্জন করেছি! উৎসাহ পেয়েছি! দ্বীন বিজয়ের স্বপ্ন নতুন করে লালন করতে শুরু করেছি! আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সকল মুসলিম ভূখণ্ডকে হেফাজত করুন। আমাদের ইসলামের তরে নিবেদিত প্রাণ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।