বিভিন্ন বুজুর্গদের ব্যবহৃত তাবারুক জিয়ারত: একটি পর্যালোচনা

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাবাররুক নিয়ে এতোটা বাড়াবাড়ি করা হয় যে, যেগুলো বেদয়াত। লোকেরা সেগুলোকে ঈদ বানিয়ে ফেলে! এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ এবং কিছু তালিবুল ইলমও সন্দেহ করে থাকে যে, এতে অসুবিধার কি আছে? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জুব্বা মোবারকের জিয়ারত নসীব হওয়া বরকতের কারণ। যদি কেউ শুধুমাত্র জিয়ারতের নিয়তে যায়, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। আমাকে জালালাবাদের একজন তালিবুল ইলম তালিবুল জিজ্ঞাসা করলো, জুব্বা মোবারকের পাশে যার দোকান। আমি দোকানে বসে জুব্বা মোবারক দেখে নিবো। কিন্তু আমি তাকে অনুমতি দিলাম না। কেননা সে মাহফিল একেবারে মেলা এবং উরসের মতো হয়ে যায়। তারিখ নির্ধারিত হয়। সময় নির্ধারিত হয়। মহিলারাও একত্রিত হয়। এমন লোকেরাও জিয়ারতের জন্য আসে, যারা নামায পড়ে না! অথচ জুব্বা শরীফের মর্যাদা তার কবর থেকে বেশি নয়। অথচ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কবরকে উৎসবের জায়গা বানাতে নিষেধ করেছেন। যখন জুব্বার মর্যাদা কবরের বরাবর নয়, তাহলে জুব্বাকে কেন্দ্র করে উৎসব করা কীভাবে জায়েয হবে?

 

এছাড়া সে সময়ে জুব্বা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীর থেকে পৃথক। আর কবরের মাটিতে রয়েছে তার শরীর। এজন্য জুব্বাকে কেউ আরশের চেয়ে উত্তম বলেননি। সুতরাং কবরকে যখন উৎসবের জায়গা বানানো হারাম, তাহলে জুব্বাকে কেন্দ্র করে বানানো কীভাবে জায়েয হবে?

কোনো কেনো জায়গায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুল মোবারক রয়েছে। সে জায়গাকে উৎসবের জায়গা বানানো জায়েয নেই। যদিও বাহ্যিকভাবে এ ধারণা করে যে, চুল মোবারক শরীরের অংশ, এজন্য এটাকে কবর থেকে উত্তম মনে হয়। কিন্তু কবরের সাথে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীর সম্পৃক্ত। যেটা দাড়ির মধ্যে বর্তমানে নেই। এজন্য উভয়টি সমান। চুল মোবারক হলো শরীরের অংশ, কবর অংশ নয়। কিন্তু শরীরের সাথে মিলে আছে। উভয়টা যেহেতু সমান, এজন্য একটির হুকুম দ্বারা অন্যটির হুকুম জানা যাবে। কবরকে যেহেতু উৎসবের জায়গা বানানো হারাম, এজন্য চুল মোবারকের জায়গাকে উৎসবের জায়গা বানানোও হারাম। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালাগাতের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছেন। তিনি কবরের কথা উল্লেখ করেছেন। যার মাধ্যমে চুল, দাড়ি, জুব্বা এবং অন্যান্য বিষয়ের হুকুম জানা হয়ে গেছে। এছাড়া সাহাবা এবং তাবেয়ীরা সেগুলোকে ঈদ বানান নি। অথচ তাদের নিকট আমাদের চেয়ে বেশি তাবাররুক ছিলো আর সওয়াবের কাজে তারা আমাদের চেয়ে বেশি অগ্রগামী ছিলেন। যদি এটা কল্যাণের কাজ হতো, তাহলে সালাফে এটার ভিত্তি থাকতো। সাহাবারা এটাবে উৎসবের জায়গা বানান নি। তাবাররুকের সাথে তারা কি আচরণ করতেন? এজন্য আমি কয়েকটি হাদীস একটি পাতায় উল্লেখ করেছিলাম। এখানে আমি সেগুলো উল্লেখ করছি।

উসমান বিন আবদুল্লাহ বিন ওয়াহাব বর্ণনা করেন-
أَرْسَلَنِي أَهْلِي إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَدَحٍ مِنْ مَاءٍ وَقَبَضَ إِسْرَائِيلُ ثَلَاثَ أَصَابِعَ مِنْ قُصَّةٍ فِيهِ شَعَرٌ مِنْ شَعَرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ إِذَا أَصَابَ الْإِنْسَانَ عَيْنٌ أَوْ شَيْءٌ بَعَثَ إِلَيْهَا مِخْضَبَهُ فَاطَّلَعْتُ فِي الْجُلْجُلِ فَرَأَيْتُ شَعَرَاتٍ حُمْرًا
অর্থাৎ আমাকে আমার স্ত্রী উম্মে সালামা রা. এর নিকট এক পেয়ালা পানি দিয়ে পাঠালেন। নিয়ম ছিলো যখন কোনো মানুষের চোখ উঠতো, তখন উম্মে সালামা রা. এর নিকট পানির পেয়ালা পাঠাতো। তার নিকট রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কয়েকটি চুল ছিলো। যেগুলোকে তিনি একটি রোপ্যের পাত্রে রেখেছিলেন। পানিতে চুল ভিজিয়ে দিতেন। এই পানি অসুস্থকে পান করানো হতো।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি ঝুকে পাত্রটি দেখলাম। কয়েকটি লাল চুল দেখতে পেলাম। বুখারী, হাদীস নং ৫৮৯৬

এ হাদীস থেকে জানা গেলো যে, একজন মহিলা সাহাবীর নিকট পাত্রতে কয়েকটি চুল ছিলো। যার সাথে এ ব্যবহার করা হয়েছে যে, যদি কেউ অসুস্থ হতো, তাহলে সুস্থতার জন্য সেটা দিয়ে ধুয়ে পানি পান করানো হতো। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেযাব নিয়ে মতভেদ ছিলো। সহীহ কথা হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুল পাকা শুরু হয়েছিলো, এজন্য যারা দেখতো, তারা খেযাবের সন্দেহ করতো। অন্যথায় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো খেযাব ব্যবহার করেন নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশটি বা তার চেয়ে বেশি চুল সাদা হয়েছিলো।

আসমা বিনতে আবু বকর রা. বর্ণনা করেন-
فرجعت إلى أسماء فخبرتها فقالت هذه جبة رسول الله صلى الله عليه و سلم فأخرجت إلى جبة طيالسة كسروانية لها لبنة ديباج وفرجيها مكفوفين بالديباج فقالت هذه كانت عند عائشة حتى قبضت فلما قبضت قبضتها وكان النبي صلى الله عليه و سلم يلبسها فنحن نغسلها للمرضى يستشفى بها
অর্থাৎ বর্ণনাকারী বলেন, আমি আসমা বিনতে আবু বকর রা. এর নিকট ফিরে তাকে সংবাদ জানালাম। তিনি আমার নিকট একটি তায়ালীসী কিসরার জুব্বা বের করে বললেন, এটা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জুব্বা। উভয়…. রেশমের কাপড় লাগানো ছিলো। এটা আয়েশা রা. এর নিকট ছিলো। তাঁর মৃত্যুর পর আমি নিয়ে এসেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা পরতেন। বর্তমানে কেউ অসুস্থ হলে আমরা এটা দ্বারা ধেীত করে রোগিকে পানি পান করাই। এর ওসীলায় আল্লাহ তায়ালা রোগিকে শিফা দান করেন। মুসলিম, হাদীস নং ২০৬৯,

আনাছ বিন মালেক রা. বর্ণনা করেন-
لما رمى النبي صلى الله عليه وسلم الجمرة نحر نسكه ثم نأول الحالق شقه الأيمن فحلقه فأعطاه أبا طلحة ثم ناوله شقه الأيسر فحلقه فقال اقسمه بين الناس
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজে আরাফাহ থেকে মিনায় তাশরীফ নিয়ে গেলেন। যখন জামরায়ে আকাবাহ এর নিকট পৌঁছলেন, সেখানে কংকর নিক্ষেপ করে তার জন্য নির্ধারিত জায়গায় আসলেন এবং কুরবানীর পশু জবেহ করলেন। এরপর মাথা মুন্ডালেন এবং আবু তালহা আনসারী রা.কে লক্ষ করে বললেন, লোকদের মাঝে চুল ভাগ করে দাও। মুসলিম, হাদীস নং ১৩০৫

এ হাদীস থেকে জানা গেলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চুল অনেক সাহাবার মাঝে ভাগ করে দেন। আর স্পষ্ট কথা হলো সাহাবারা পৃথিবীর দিগন্তে বিস্তৃত হয়েছেন। এজন্য কোথাও চুল মোবারক পাওয়া গেলে সাথে সাথে অস্বীকার না করা চাই। বরং সনদ যদি সহীহ হয়, তাহলে সেটার সম্মান করা চাই। আবার যদি ভিত্তিহীন এটা যদি দৃঢ়ভাবে বলা সম্ভব না হয়, তাহলে চুপ থাকবে। মুশতাবিহ বিষয়ে চুপ থাকাই শরীয়তের নির্দেশ।

উম্মে আতীয়া রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেয়ে যয়নাবের গোছলের ঘটনায় বর্ণনা করেন-
دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَغْسِلُ ابْنَتَهُ فَقَالَ اغْسِلْنَهَا ثَلَاثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَاجْعَلْنَ فِي الْآخِرَةِ كَافُورًا فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَأَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ فَقَالَ أَشْعِرْنَهَا إِيَّاهُ
অর্থাৎ যয়নাব রা.কে গোছল দেওয়া সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন।
যখন আমরা গোচল শেষ করলা, তিনি তার কাপড়ের একটি অংশ দিয়ে বললেন, এটাকে তোমরা কাফনের মধ্যে শরীরের সাথে লাগিয়ে দাও। বুখারী, হাদীস নং ১২৫৪

শাহ আবদুল হক রহ. মিশকাতের ব্যাখ্যাগ্রন্থে লিখেছেন, পূর্ববর্তী সাহাবা এবং তাবেয়ীনদের সাথে জড়িত কোনো বিষয়ের দ্বারা বরকত লাভের ক্ষেত্রে এ হাদীস মূলনীতি।

জানা গেলো যে, তাবাররুক দ্বারা বরকত লাভের এটি একটি পদ্ধতি। মৃত্যুর পর সেটা কাফনে দিয়ে দিবে। কিন্তু কুরআন অথবা দোয়া লিখে কাফনে দেওয়া জায়েয হবে না। কেননা এর দ্বারা কুরআন এবং দোয়ার সম্মান করা হয়না। কেননা কুরআনের সাথ নাপাকের সংমিশ্রণ হারাম। আর মৃতের শরীর কয়েকদিন পরে ফুলে ফেটে যায়। আর তখন নাজাসত কুরআনে লাগবে। এমনভাবে এমন কিতাবাদি যার মধ্যে দোয়া অথবা আল্লাহ এবং রাসূলের নাম রয়েছে, সেগুলো সম্মানের যোগ্য। শুধুমাত্র সাদা কাগজ ইলমের মাধ্যম হওয়ার কারণে সম্মানযোগ্য। কেউ কেউ হামান এবং ফিরাউনের নাম লিখে সেখানে জুতা মারে! এটা একেবারে অহেতুক কাজ। এর দ্বারা শব্দকে বেহুরমতি করে বাহাদুর দেখালেন!

মোটকথা হলো, তাবাররুককে ঈদের মতো উৎসবের জায়গা বানাবে না। বুঝতে হবে যে, এই বস্তুগুলোর সম্মান কি কারণে? এজন্য যে এগুলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের। শরীয়তের আহকামও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছেন। সেগুলোর মূল্যায়ন করা চাই। সেগুলোতেও বরকত রয়েছে। সে বরকতও নেয়া চাই। ওই তালিবুল ইলম যে প্রশ্ন করেছিলো যে, সালাফে সালিহীন তাবাররুকের সাথে কি আচরণ করেছেন, এ উত্তর জানা গেলো। তাদের মতো আমাদেরও আমল করা উচিৎ। বাড়াবাড়ি করা যাবেনা।

অনেকেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাবাররুক নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন। জুব্বার শরীফের জন্য মান্নত করেন। ফুকাহায়ে কেরাম এটাকে হারাম বলেছেন। কারণ ইবাদত কোনো মাখলুকের জন্য হয়না। ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার হয়ে থাকে। ‘আল বাহরুর রায়েক’ নামক কিতাবে এ বিষয়ে ঈজমা তথা ঐক্যমত নকল করা উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো মাকলুকের জন্য মান্নত করা সকলের মতে হারাম। মান্নত সংঘটিতই হয়না। সেটা পূর্ণ করাও ওয়াজিব নয়। এটা পরিষ্কার হারাম। এ ধরণের খাবার খাওয়া হারাম।

তাবাররুকের উপর ভরসা কেউ থাকবেন না। ঈমান ব্যতিত সব কিছুই বেকার। দেখুন উবাই ইবনে সালুল এর নিকট অনেক তাবাররুক জমা হয়েছিলো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জামা মোবারক কাফনের জন্য তাকে দিয়েছিলেন। এমন সৌভাগ্য আর কতজনের নসীব হয়েছে! আজকাল অনেকেই কাবার গিলাফের টুকরো কাফনে দেন। কিন্তু কাবার গিলাফের সাথে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পোশাকের সম্পর্ক!
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরতো আরশ এবং কাবা সব জায়গা থেকে উত্তম। যদি কাবার গিলাফকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামার বরাবরও ধরে নেই, তাহলেও এ সৌভাগ্য কার নসীব হয় যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থুতু মোবারক তার মুখে পড়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই মৃত্যুর পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দিয়েছিলেন।থুতু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরের অংশ। যার বরকত পোশাকের চেয়ে বেশি। এরপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার নামাযের ইমামতি করেছেন। তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছেন। আজকের কার এ সৌভাগ্য নসীব হবে! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের নিয়ে তার জানাযার নামাজ পড়েছেন। কিন্তু এ সমস্ত তাবাররুক আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কোনো উপকারে আসবে না। কেননা সে ছিলো ঈমান থেকে বঞ্চিত। আল্লাহ তায়ালা পরিষ্কার বলেছেন, “যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, এবং কাফের অবস্থায় মারা গেছে, তারে ঠিকানা জাহান্নাম।”
মূল: হাকিমুল উম্মাত আল্লামা আশরাফ আলি থানভী রাহি.।

 

Check Also

সদকায়ে ফিতর টাকা দ্বারা আদায় করার দলিল নেই?

শায়খ কাজি ইবরাহিম সাহেবের ফতোয়া দেখলাম। তার বক্তব্য অনুসারে টাকা দ্বারা সদকায়ে ফিতর আদায়ের কথা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *