আমাদের দেশে অনেক বক্তাদের মুখে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা সংক্রান্ত একটি বর্ণনা শুনা যায়। কেউ কেউ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নুরের তৈরী হওয়ার পক্ষে এটি দ্বারা দলিল পেশ করেন।
বর্ণনাটি হলো, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন জিবরিলকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার বয়স কত? জিবরিল বললেন: জানি না। তবে আকাশে একটি তারকা ৭০ হাজার বছর পর একবার উঁদিত হয়। আমি সে তারকা ৭২ বার দেখেছি। এর থেকে আপনি আমার বয়স অনুমান করতে পারেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে জিবরিল, আমি আল্লাহর জাতের কসম করে বলছি, আমি হলাম সে তারকা।
দুঃখজনক বিষয় হলো, কিছু কিছু বইয়ে এ ঘটনা ইমাম বুখারির দিকে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করা হয়। আজ আমরা এ ঘটনা নিয়ে পর্যালোচনা করব। এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন ইমাম হালাবি “আস সিরাতুল হালাবিয়্যাহ” তে। পুরো ঘটনার বর্ণনা হলো:
ورأيت في كتاب التشريفات في الخصائص والمعجزات لم أقف على اسم مؤلفه، عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه ্রأن رسول الله صلى الله عليه وسلم سأل جبريل عليه الصلاة والسلام فقال يا جبريل كم عمرت من السنين؟ فقال يا رسول الله لست أعلم، غير أن في الحجاب الرابع نجماً يطلع في كل سبعين ألف سنة مرة، رأيته اثنين وسبعين ألف مرة فقال: ্রيا جبريل وعزة ربي جل جلاله أنا ذلك الكوكبগ্ধ رواه البخاري، هذا كلامه،
ইমাম হালাবি বলেন: আমি ‘আত তাশরিফাত ফিল খাসায়িসি ওয়াল মু’যিজাত’ বইয়ে দেখেছি। তবে এ বইয়ের লেখক সম্পর্কে আমি জানতে পারি নি। এরপর আবু হুরায়রা রাযি. এর সূত্রে বর্ণনাটি উল্লেখ করে বলেন, এটি ইমাম বুখারি বর্ণনা করেছেন। আর বুখারি বর্ণনা করার কথা বলেছেন ওই অপরিচিত লেখক।-আস সিরাতুল হালাবিয়্যাহ” ১/৬৬।
এখানে কয়েকটি বিষয় খেয়াল করুন। এ ঘটনা যে বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বইয়ের লেখক সম্পর্কে জানা যায় না। এমন অপরিচিত একজন লেখক ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। তাও এ বর্ণনার সনদ পাওয়া যায় না। ওই অপরিচিত লোকই এ বর্ণনা বুখারির নামে চালিয়ে দিয়েছেন। কিতাবাদি সম্পর্কে যাদের সামান্য জানাশুনা আছে, তাদের উপলব্ধি করার কথা যে, এটি জাল বর্ণনা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শান বর্ণনা করতে গিয়ে এ ধরণের ভিত্তিহীন জাল বর্ণনা পেশ করা জায়েজ নেই। আল্লাহ তাআলা আমাদের জাল হাদিস বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকুন।