আব্বাস রাযি. রাসুল আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আপন চাচা। বদরের যুদ্ধে আব্বাস রাযি. যুদ্ধ বন্দি হয়ে আসলে তার কষ্টের কারণে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমাতে পারতেন না! পিতার অবর্তমানে চাচারা পিতার ভ‚মিকায় থাকেন। আব্বাস রাযি. ও পিতার মত তাকে ছায়াপ্রদান করেছিলেন সারা জীবন। আব্বাস রাযি. এর একজন ছেলে হলেন আবদুল্লাহ। ইবনে আব্বাস রাযি. নামে সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে তিনি সমাদৃত। উম্মাহর সবচেয়ে বড় মুফাসসির ছিলেন তিনি। বয়সে ছোট হলেও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পরামর্শে উমর রাযি. তাকে গুরুত্ব দিতেন।
আবদুল্লাহ ছাড়াও আব্বাস রাযি. এর আরও কয়েকজন ছেলে ছিলেন। তারা হলেন, ফযল বিন আব্বাস, ক্বুছাম বিন আব্বাস, মা’বাদ বিন আব্বাস, কাসির বিন আব্বাস, তাম্মাম বিন আব্বাস রাযি. অন্যতম।
ক্বুছাম আরবিতে ক্বাফ বর্ণের উপর পেশ, তারপর ‘ছা’ বর্ণের উপর হরকত হবে জবর তারপর মীম। ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি.। তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আপন চাচাত ভাই। ইমাম ইবনে আবদিল বার মালেকি রাহি. ‘আল ইসতিআব’ এ, ইমাম ইবনুল আছির ‘উসদুল গাবাহ’ তে, ইমাম জাহাবি ‘সিয়ারু আলামিন নুবালা’ তে, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি ‘ আল ইসাবাহ’ তে তার জীবনী আলোচনা করেছেন।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাওজা মুবারকে তাকে দাফন করানোর জন্য যারা অবতরণ করেছিলেন, তাদের মাঝে অন্যতম ছিলেন ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি.। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবরে কারা অবতরণ করেছিলেন, এ সংক্রান্ত আলোচনা করতে গিয়ে ইমাম ইবনে আবদিল বার মালিকি রাহি. লিখেন:
وأصح ذلك أنه نزل في قبره العباس عمه وعلي رضى الله عنهما معه وقثم بن العباس والفضل بن العباس ويقال كان أوس بن خولي وأسامة بن زيد معهم وكان آخرهم خروجاً من القبر قثم بن العباس وكان آخر الناس عهداً برسول الله صلى الله عليه وسلم ذكر ذلك ابن عباس وغيره وهو الصحيح
অর্থাৎ বিশুদ্ধ মত হল, রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবরে তাঁর চাচা আব্বাস রাযি., আলি রাযি., ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি., ফজল বিন আব্বাস রাযি. নেমেছিলেন। কারও মতে আউস এবং উসামা বিন জায়দ রাযি. অবতরণ করেছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবর মোবারক থেকে সর্বশেষ বের হয়েছিলেন ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি.। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সর্বশেষ………………….ছিলেন তিনি। আল ইসতিআব বি মা’রিফাতিল আসহাব: ১/১৬।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের বাহনের পিছনে তাকে বসিয়ে তার জন্য দোয়া করেছিলেন। আবদুল্লাহ বিন জাফর বর্ণনা করেন:
كنت أنا وعبيد الله وقثم ابنا العباس نلعب. فمر بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال: ” ارفعوا إلي هذا ” يعني قثم فرفع إليه، فأردفه خلفه، وجعلني بين يديه ودعا لنا.
অর্থাৎ আমি, উবায়দুল্লাহ এবং ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. একদিন খেলাধুলা করছিলাম। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, ক্বুছামকে আমার কাছে নিয়ে এস। তিনি তাকে তাঁর বাহনের পিছনে এবং আমাকে সামনে বসালেন। এরপর আমাদের জন্য দোয়া করলেন।
ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর মা হলেন উম্মে লুবাবা বিনতে হারিছ। কালবির বর্ণনা মতে খাদিজা রাযি. এর দ্বিতীয় মহিলা হিসাবে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। উসদুল গাবাহ: ১/৯০৭।
ক্বুছাম ছিলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কলিজার টুকরো নাতি, জান্নাতি যুবকদের সর্দার হজরত হুসাইন রাযি. এর দুধ ভাই। চেহারাগত দিক থেকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারার সাথে ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর চেহারার মিল ছিল। তবে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন একেবারে কম।
খলিফা বিন খাইয়্যাতের বর্ণনা মতে আলি রাযি. খলিফা থাকাবস্থায় তাকে মক্কার গভর্ণর বানান। আলি রাযি. শহিদ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি মক্কার গভর্ণর ছিলেন। জুবায়ের বিন বাক্কার এর বর্ণনা মতে মদিনার গভর্ণর বানান।
আমিরুল মুমিনিন মুআবিয়া রাযি. এর খেলাফতকালে সাঈদ বিন উসমান এর সাথে সমরকন্দ অভিমূখে অভিযানে তিনি বের হন। এখানে যুদ্ধরত অবস্থায় শাহাদাতের অমীয় সুধা তিনি পান করেন। বিশুদ্ধ মতানুসারে সমরকন্দে তাকে দাফন করা হয়। বিস্তারিত দেখুন, আল ইসতিআব: ১/৪০১, উসদুল গাবাহ: ১/৯০৭, সিয়ারু আলামিন নুবালা: ৪/৪৪২-৪৪৩, আল ইসাবাহ: ৫/৪২০।
বর্ণনায় পাওয়া যায়, আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাযি. এর কাছে যখন তার ভাই ক্বুসাম বিন আব্বাসের শাহাদাতের সংবাদ পৌঁছাল, তখন তিনি সফররত ছিলেন। তিনি বাহন থামিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে দীর্ঘক্ষণ দোয়া করলেন। এরপর বাহনে আরোহণ করে কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, “তোমরা ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা কর। নামাজ মুত্তাকি ছাড়া অন্যদের জন্য অনেক কঠিন।” উসদুল গাবাহ: ১/৯০৭।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আপন চাচাত ভাই হওয়ার পরও ইসলামের সূমহান বাণী প্রচার করার জন্য মক্কা, মদিনা ছেড়ে হাজার মাইল দূরের সমরকন্দে এসেছেন! তার রক্তে সমরকন্দের জমিন সিঞ্চিত হয়েছে! সাহাবির রক্তে সিঞ্চিত জমিন বলেই হয়ত কমিউস্টিদের দীর্ঘ অত্যচার এবং ষড়যন্ত্রের পর সমরকন্দ আবারও ইসলামের দিকে ফিরতে শুরু করেছে!
ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর কবর যে পাহাড়ে, সেটাকে তারা ‘শাহে জিন্দা’ বলে। ‘শাহ’ মানে বাদশাহ। জিন্দা মানে জীবিত। যেহেতু ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. সেখানে শহিদ হয়েছিলেন, আর শহিদরা কুরআনের ভাষ্যমতে জীবিত, এজন্য সমরকন্দবাসী এর নাম দিয়েছে ‘শাহে জিন্দা’ তথা জীবিতদের বাদশাহ!
এখানে তিনি ছাড়া আরও অসংখ্য কবর রয়েছে। প্রচÐ বৃষ্টি এবং শীত উপেক্ষা করে আমরা শাহে জিন্দাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সাঈদ আহমদ এবং মুর্শেদ রণভঙ্গ দিল। দুপুরের খাবার খেয়ে তারা হোটেলে ফিরে গেল। আমি, জামান, ফারুক এবং হাসিব শাহে জিন্দার উদ্দেশ্যে ট্যক্সিতে চড়লাম।
আগে বলেছিলাম উজবেকিস্তানে গাড়ি ডান পাশ দিয়ে চলে। ট্যাক্সি আমাদের শাহে জিন্দার বিপরিত পাশে নামিয়ে দিয়ে গেল। আমরা একটি মজার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। সেখানে চাইলেই আপনি রাস্তা পার হতে পারবেন না। রাস্তার দুই পাশের খাম্বাতে সুইচ রয়েছে। সুইচ টিপলে মানুষ পারাপার চিহেৃর বাতি জ্বলে ওঠবে। সাথে সেকেন্ড কাউন্ট করতে থাকবে। পারাপার চিহৃ জ্বলে ওঠার পর উভয় পাশের গাড়ি এমনিতে থেমে যাবে। সেকেন্ড কাউন্ট শেষ হলে আবার চলতে শুরু করবে। এর মাঝে আপনাকে দ্রæত পার হয়ে যেতে হবে। আমরা বারবার সুইচ টিপতে থাকি। কিন্তু বাতি জ্বলে না! এ দিকে বৃষ্টি আর শীতে যবুথবু অবস্থা! কিছুক্ষণ পর একজন স্থানীয় লোক এলেন। তিনি এক সাথে দুইটি টিপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখলেন। মানুষ পারাপার চিহৃ জ্বলে ওঠল! আমরা তার সাথে দ্রæত পার হয়ে ওপারে চলে গেলাম।
ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর মাকবারা একটি পাহাড়ের উপর। পাহাড়ের পাদদেশে কারুকার্যমÐিত একটি সুবিশাল গেইট রয়েছে। গেইটে সুন্দর হস্তাক্ষরে আরবিতে লিখে রাখা হয়েছে:
عجلوا بالصلوة قبل الفوت: عجلوا بالتوبة قبل الموت
অর্থাৎ নামাজ কাজা হওয়ার আগে দ্রæত আদায় করুন। মৃত্যুর আগে দ্রæত তাওবা করুন।
গেইটে প্রবেশ করতেই হাতের বামে পুরাতন আমলের ছোট একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের কার্পেট অনেকটা মক্কা,মদিনার আদলের। কমিউনিস্টরা এটাকে শরাবখানা বানিয়ে ছিল। বর্তমানে দলে দলে মানুষ নামাজ আদায় করে। আমরা জামাতের সাথে আসরের নামাজ আদায় করলাম।
উজবেক সরকার শাহে জিন্দাকে অনেকটা পর্যটন এলাকা বানিয়ে রেখেছে। এজন্য পাহাড়ের উপর জিয়ারতের জন্য উঠতে হলে জনপ্রতি টিকেট কাটতে হবে! টিকেটে আপত্তি ছিল না! কিন্তু টিকেট কেটে পুরুষ, মহিলা গণহারে প্রবেশ করছে! জিন্স পরে বেপর্দা মহিলা উপরে ওঠে যাওয়ার দৃশ্য ছিল আমাদের জন্য কষ্টের। অবশ্য গলি ঘুপচি ঘুরে ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর মাকবারা পর্যন্ত যায় না। স্থাপত্য শিল্পের অনিন্দ সুন্দর কারুকার্য মÐিত গুম্বুজের কাছে ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকে। এছাড়া পাহাড়ের এক পাশ থেকে কিছুদের সরকন্দের ঐতিহ্যবাহী রেগিস্তান চত্তরের গুম্বুজগুলো ফুটে ওঠে। ওখানে দাঁড়িয়ে বেশিরভাগ পর্যটক ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকে! মুষলধারার বৃষ্টি এবং শীতের কারণে সেদিন মানুষের আনাগুনা ছিল কম! আমরা সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠে এলাম।
পাহাড়ে উঠতেই প্রথমে নজরে পড়বে অর্ধ পৃথিবীর দুর্ধর্ষ শাসক, তৈমুর লংয়ের ভাতিজির কবর। কবরের ফলকের লেকা ট্রান্সলেট করে জানতে পারলাম যে, তৈমুরের ভাতিজি ১৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছে! তার মত সুন্দরি নাকি কেউ ছিল না!
পাহাড়ে অনেক কবর! সবার কবর সম্পর্কে জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। অনেক গলি ঘুপচি এবং অন্ধকার ছোট পথ মাড়িয়ে দায়িত্বরত পুলিশ আমাদের ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর কবরে নিয়ে গেলেন! ছোট জানালার মত একটি খিড়কি ছিল। অন্য কোন লোক না থাকায় আমাদের জন্য ছোট সে খিড়কি তিনি খুলে দিলেন। আমরা প্রানভরে দীর্ঘ সময় নিয়ে তার কবর জিয়ারত করলাম।
বাংলাদেশের মাজার মানে মোমবাতি, আগরবাতি, কবরের উপর টাকা নিক্ষেপের খেলা! অথচ ইসলামে এগুলো সুস্পষ্ট হারাম। উজবেকিস্তানে এগুলোর কোন সুযোগ নেই। সুন্নাহ সম্মত জিয়ারত করা ছাড়া মাজার কেন্দ্রিক আমাদের দেশীয় কোন কূসংস্কার সেখানে নজরে পড়ে নি। সিজদা করার প্রশ্নই আসে না!
ক্বুছাম বিন আব্বাস রাযি. এর কবরের পাশের ছোট জায়গায় আবু ইয়াজিদ বিসতামি, আবুল হাসান খিরকানি রাহি. সহ অসংখ্য পূণ্যাত্মা মুরাকাবা করতেন। আমরা দোয়া করে ইবনে আব্বাসকে সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম। সরকন্দের বৃষ্টি এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আপন চাচাত ভাইয়ের কবর জিয়ারত আমাদের অন্তরে পবিত্র শুভ্রতা ছড়িয়ে দেয়!
টিলার কোল জোড়ে হাজার হাজার কবর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সমরকন্দ যেহেতু ইলমের শহর, এজন্য নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, এ মাকবারায় নাম না জানা অসংখ্য ইলমের শাহসাওয়ার ঘুুমিয়ে আছেন! এক সময় যাদের পদভারে মুখর থাকত সমরকন্দের ইলমি মজলিস। আমরা তাদের সকলের উদ্দেশ্যে ঈসালে সাওয়াব করলাম। পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে রেগিস্তান স্কয়ারের সৌন্দর্য কিছুক্ষণ উপভোগ করে নিচে নেমে এলাম।
নিচে নেমে মসজিদের পাশে দাঁড়ানো বোরকাবৃতা একটি পরিবার পেলাম। সমরকন্দে আমাদের দেকখা প্রথম হিজাব। সাথে হিজাবে আবৃত তাদের মেয়ে রয়েছে। তাশকন্দের মাদরাসায় পড়াশুনা করে। আরবি আমাদের জিজ্ঞাসা করল, কোথা থেকে এসেছেন! বললাম, বাংলাদেশ থেকে! তাদের জিজ্ঞাসা করে জানলাম যে, ছুটির দিন হওয়ায় তাশকন্দ থেকে তারা ইবনে আব্বাস রাযি. এর কবর জিয়ারত করতে এসেছে!
মনে মনে ভাবলাম, উজবেকিস্তানের এ প্রজন্ম যদি ইবনে আব্বাস, বুখারি, মাতুরিদিদের সাথে পরিচিত হয়, আশা করি কমিউনিজমের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে হারিয়ে যাওয়া ইসলাম আবার এখানে ফিরে আসবে। ভাবতে ভাবতে আমরা নিচে নেমে এলাম। নিচের মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করলাম!
বৃষ্টি কিছুটা কমে আসায় ভেজা শরীর শীত আরও বেশি অনুভুত হচ্ছে! বাংলাদেশের মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীতের মতোই! হাসিব ভাই ট্যাক্সি কল করলেন! আমরা সমনকন্দের উঁচু, নিচু পাহাড় সাতরিয়ে হোটেলে পৌঁছালাম। সাথে নিয়ে গেলাম সারা জীবনের জন্য সুন্দর কিছু স্মৃতি! আল্লাহুম্মা লাকাল হামদ!