আমাদের দেশে যারা আট রাকআত তারাবীহ পড়েন, তারা আগে বলতেন বিশ রাকআত তারাবীর পক্ষে কোন সহিহ হাদিস নেই৷ শায়খ অাবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, কাজি ইবরাহিম এবং মুজাফফার বিন মুহসিনের একাধিক বক্তব্য রয়েছে এ ব্যাপারে৷
এরপর যখন বিশ রাকআতের পক্ষের সহিহ বর্ণনাগুলো মানুষের সামনে আসতে শুরু করল, তখন কেউ কেউ সুর পাল্টিয়ে নতুন আরেকটি বেদআতি কথা চালু করলেন৷ তাদের ভাষ্যনুযায়ী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তারাবিহ আট রাকআত প্রমাণিত৷ বিশ রাকআত উমর রা. থেকে প্রমাণিত৷ সুতরাং আট এবং বিশ উভয়টি পড়তে পারেন৷
এটি একটি মিথ্যা দাবি৷ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবিহ আট রাকআত পড়ার পরও উমর রাকআত সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলবেন? এটা আপনি চিন্তা করেন কীভাবে?
উমর রা. রাকআত বৃদ্ধি করেননি, তিনি শুধু বিক্ষিপ্ত জামাতকে একত্রিত করেছেন৷ এর পক্ষে একটি হাদিস আমি উল্লেখ করছি৷
عن أبي بن كعب _رضي الله عنه_ أن عمر أمر أبي أن يصلي بالناس في رمضان، فقال: إن الناس يصومون بالنهار ولا يحسنون أن يقرؤوا, فلو قرأت القرآن عليهم بالليل, فقال: يا أمير المؤمنين هذا شيءٌ لم يكن. فقال: قد علمت ولكنه أحسن, فصلى بهم عشرين ركعة.أخرجه الضياء المقدسي في (
অর্থাৎ উমর রা. উবাই রা. কে রমজানে লোকদের তারাবির ইমামতি করার নির্দেশ দেন৷ তিনি জবাবে বললেন, অাপনি এমন একটি কাজ করছেন, যে কাজ আপনার পূর্বে (আবু বকর রা.) করেননি৷ তিনি বললেন, অামি জানি৷ তারপরও আমি ভাল করছি৷ উবাই বিন কাব তখন লোকদের নিয়ে বিশ রাকআত তারাবিহ পড়লেন৷ (আল আহাদিসুল মুখতারাহ: জিয়া উদ্দিন মাকদিসি, হাদিস নং, ১১৬১, কানযুল উম্মাল, হাদিস নং, ৩৪৭১৯৷)
এ হাদিসের সনদ হাসান৷ স্বয়ং মুহাক্কিকও হাসান বলেছেন৷ এ হাদিসে একটি বিষয় লক্ষণীয়৷ বিক্ষিপ্ত জামাতকে একত্রিত করার কারণে উবাই রা. প্রতিবাদ করেছেন৷ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আট রাকাত যদি প্রমাণিত হতো, এরপর উমর রা. সেটা বাড়িয়ে বিশ রাকাত বনাতেন, তাহলে একজন সাহাবি প্রতিবাদ করতেন না? রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশ রাকাত প্রমাণিত হওয়ার কারণে উমর রা. এর যুগে সকল সাহাবির ঐক্যমতে বিশ রাকাত তারাবিহ পড়া হয়েছে৷
বিশ রাকাত তারাবির ব্যাপারে সাহাবিদের ঐক্যমতের কথা বলেছেন ইবনে আবদিল বার মালেকি, ইবদে কুদামা এবং শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া৷ ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ তারাবির রাকাত সংখ্যার উল্লেখ করতে গিয়ে কয়েকটি মত তুলে ধরেছেন৷ এর মাঝে আট রাকাতের কোন মতের কথাই উল্লেখ করেন নি। এজন্য তারাবির নামাজ ২০ রাকাত পড়ুন।